কারাগারে ব্যারিস্টার সুমন যুবদল নেতা শামীম হত্যায় ব্লগার ঈশান রিমান্ডে
২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১ পিএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১ পিএম
যুবদল নেতা ও মিরপুরের বাঙালিয়ানা ভোজের সহকারি বাবুর্চি হৃদয় মিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়াও, পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে পল্টন থানার যুবদল নেতা শামীর হত্যা মামলায় নাফিজ ফুয়াদ ইশান নামে এক ব্লগারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
গতকাল রবিবার শুনানি শেষে ঢাকা পৃথক দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট এসব আদেশ দেন।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সুমনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুল হালিম। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পক্ষে আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করে, রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধীতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ'র আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সুমনকে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, আসামির পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পেয়ে তাকে মামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততা ও ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনের জন্য দফায় দফায় বিধি মোতাবেক ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আসামি একজন ব্যারিষ্টার, বিধায় কৌশলে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামির কাছে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আসামি মামলার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায়। আসামির কাছে পাওয়া তথ্য গোপনে যাচাই বাচাই করে দেখা হচ্ছে। তথ্যাদী যাচাই বাছাই শেষে প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে পুনরায় আসামির পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে। মামলার তদন্ত চলমান। মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মামলার সুষ্ঠ ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে আটকের আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গত ২১ দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।। গত ২২ অক্টোবর আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই হৃদয় জুমার নামাজ আদায় করে মিরপুর-১০ নম্বরে সমাবেশে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ককটেল বোমা নিক্ষেপ ও গুলিও চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হন হৃদয়। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুর ১০ নং হাতিয়াইন ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি। এ ঘটনায় তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি ব্যারিস্টার সুমন। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সায়েদুল হক সুমন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি, তবে পাননি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে পরাজিত করেন। জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য এবং বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ফেইসবুকে আলোচনার জন্য সায়েদুল হক সুমন জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি ব্যারিস্টার সুমন হিসেবেই পরিচিত।
এদিকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মামলায় পল্টন থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নজমুল হাচান বিকালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে আদালতে হাজির করেন।
অন্যদিকে নাফিজ ফুয়াদ ইশান একই থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তন্ময় কুমার বিশ্বাস সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
মোশরফের মামলায় আইনজীবী খোরশেদ আলম আজাদ জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি। মুক্তিযোদ্ধার সময় তিনি সমন্বয়ক ছিলেন। আসামি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। শারীরিকভাবে অসুস্থ। আসামি পায়ে রড লাগানো রয়েছে। যে এলাকার ঘটনায় ওই এলাকার বাসিন্দাও না তিনি। জামিন দিলে পলাতক হবেন না।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আসামির জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে বলেন, তিনি অসুস্থ, ও বয়স্ক ব্যক্তি হলে রাজনীতি থেকে অবসর নিতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। ঘটনায় সময় গণভবনে মিটিং হয়েছিলো সেখানে এই আসামি অংশগ্রহণ করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আসামি জড়িত রয়েছে। এ সময় মোশাররফ হোসেন না না বলেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটররা তাকে থামিয়ে দেন এবং বিচারক বলেন, আপনার (মোশারফ) কিছু বলার থাকলে পরে বলবেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য শেষ হয়েই বিচারক আসামির কোন বক্তব্য না শুনেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অন্যদিকে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় যখন ব্লগার নাফিজ ফুয়াদ ইশানের রিমান্ড শুনানি চলছিল। তখন এ আসামির পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলো না। তাই বিচারক আসামির কিছু বলার আছে কি না জিজ্ঞাসায় আসামি বলেন, হত্যা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমাকে তো সাইবার জনিত কারণে ধারা হইছে। এই মামলা কোথা থেকে আসলো। তখন প্রসিকিউটর ফারুকী বলেন, পুলিশ হত্যা, মেট্টোরেলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারোনা চলাচ্ছে। তা নিয়ে তার বিরুদ্ধে আলাদা মামলা হইছে। এরপর বিচারক ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে এদিনই রাজধানী থেকে মোশরফ হোসেনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) পুলিশ। গ্রেপ্তার সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কক্সবাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একাধিক মামলা হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সঠিক অবস্থানে বিএনপি
রিজিকদাতা একমাত্র আল্লাহ, ইবাদত একমাত্র আল্লাহর-১
নানা আয়োজনে সারা দেশে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে হঠকারি সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
বিএনপির অবস্থানেই ১২ দলীয় জোট
দক্ষদের পদোন্নতি দেয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
এসডিজি শুধু ঘোষণা দিলে হয় না, জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখতে হবে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়িয়েছে
আইন-শৃঙ্খলার অবনতি : নিরাপত্তার দাবিতে মোহাম্মদপুরে থানা ঘেরাও
বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার -নাহিদ ইসলাম
পুলিশের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ৩৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ
পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল পাসপোর্ট বাতিল হচ্ছে
রেমিট্যান্স জোয়ার অব্যাহত
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে আরো ৩৯ গুমের অভিযোগ
ভারতে হিন্দুদের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে বর্ণবৈষম্য
ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন আরব ও মুসলিম নেতারা
তবুও বেপরোয়া ব্যাটারি রিকশা
প্রতিবন্ধী মাকে কাঁধে নিয়ে দেশভ্রমণ
চিড়িয়াখানায় রহস্যময় প্রাণী